Srinivasan Ramanujan - The man who knew infinity

Srinivasan Ramanujan - The man who knew infinity

"An equation has no meaning to me unless it expresses a thought of God!"

S. Ramanujan

২২শে ডিসেম্বর, ১৯৮৭ ভারতের তামিল নাড়ুর এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রামানুজান। গণিতের ইতিহাসে যদি জিনিয়াস শব্দ দ্বারা কাউকে আখ্যায়িত করা যায় তবে রামানুজান সেই তালিকায় প্রথমের দিকে থাকবেন। ব্রাহ্মন পরিবারে জন্মগ্রহন করাই ছোটবেলা থেকেই তিনি অনেক ধার্মিক পরিবারে বড় হয়ে ওঠেন এবং নিজেও খুব ধার্মিক ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি গণিতের প্রতি অনেক আগ্রহী ছিলেন, গণিতের প্রতি তার ভালোবাসা এতই প্রখর ছিল যে লোকমুখে শোনা যেত তিনি মানুষ থেকে সংখ্যা বেশি ভালোবাসতেন।

কিন্তু রামানুজানের এই মেধা বোঝার মত মানুষ তখন ভারতীয় উপনিবেশে ছিল না। তাই কাজ খোঁজার সন্ধানে এবং নিজের গণিতের কাজকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য তিনি ১৯১১ সালে তৎকালীন প্রখ্যাত গনিতবিদ জি এইচ হার্ডিকে একটি পত্র লিখেন, পত্রে তিনি তার নিজের উদ্ভাবন করা ১০০ উপপাদ্য লেখেন। এই উপপাদ্যের অনেকগুলো হার্ডি জানলেও অনেকগুলোই তিনি জানতেন না। কিন্তু এই উপপাদ্যের কোনটিরই প্রমাণ সেই পত্রে ছিল না। তাই রামানুজান সত্যিই প্রমাণগুলো করেছেন কিনা তা জানার কোন উপায় ছিল না।

এই সমস্যা থাকা সত্ত্বেও উপপাদ্যের উপর ভরসা করে হার্ডি রামানুজানকে ট্রিনিটি কলেজ এ আমন্ত্রন জানান তার কাজ প্রকাশ করার জন্য। আমত্রন পেয়ে নিজের ধর্মমতের বিরূদ্ধে রামানুজান ব্রিটেনে আসেন। ব্রিটেনে আসার পরও তার যাত্রা খুব একটা সহজ ছিল না। রামানুজান এর গণিতের অনেক জ্ঞান থাকলেও অন্য বিষয় সম্পর্কে তার কোন দক্ষতাই ছিল না এবং গণিত সম্পর্কে তাঁর দক্ষতাও অসম্পূর্ণ ছিল। গণিতের কোন সমস্যাকে তিনি গাঠনিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করতেন না। তাঁর সকল উপপাদ্যই ছিল অনুমানের উপর ভিত্তি করে এবং প্রমান ছিল পাশবিক বল। এখন হয়ত অনেকেই বুঝতে পারছো কেন বলেছিলাম রামানুজান গণিতের ইতিহাসে জিনিয়াস। কিন্তু এই পদ্ধতিতে গণিতের প্রকাশনা সম্ভব নয় বলে হার্ডি তাকে বিভিন্ন বেসিক শেখানোর দায়িত্ব নেন। কিন্তু রামানুজানের বিশ্বাস ছিল যে তাঁর গণিতের তত্ত্ব সবই ঈশ্বর তাকে দিয়ে করাচ্ছেন তাই তিনি চিরাচরিত পদ্ধতি শিখতে তেমন ইচ্ছুক ছিলেন না এবং এই বিষয়ে হার্ডির সাথে তাঁর অনেক মতবিরোধ হয়। যদিও অবশেষে রামানুজান হার্ডির কথামতোই কাজ করেন এবং তাঁর সাথে অনেক তত্ত্বে একসাথে কাজ করেন।

রামানুজান তাঁর জীবনাবস্থাই গণিতের এমন কোন শাখা নেই যার উপর কাজ করেননি। রামানুজান এর কাজের মধ্যে continued fraction, Riemann zeta function, elliptic integrals, hypergeometric series অন্যতম। এছাড়াও তিনি pie function, prime number function, ramanujan conjecture, euler’s number ইত্যাদির উপর কাজ করেন। এত সকল গবেষণার মাঝেও রামানুজানের ব্যাক্তিগত জীবন খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। হার্ডির সাথে অনেক তত্ত্বে একসাথে কাজ করা এবং লন্ডন এর বিভিন্ন ম্যাগাজিন এ তাঁর কাজ প্রকাশিত হলেও রামানুজান এর স্থায়ী কোন চাকরী ছিল না। যার ফলে তিনি নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তাই ছিলেন।

হার্ডি ট্রিনিটি কলেজের একজন অধ্যাপক হিসেবে রামানুজানকে নেওয়ার পরামর্শ দিলেও তা মেনে নেওয়া হয় না। এর মূলত দুইটি কারণ ছিল, প্রথমত রামানুজান ছিলেন একজন ভারতীয়, এজন্য ব্রিটিশ অনেক গণিতবিদ তাঁর প্রতিভাকে স্বীকার করতে চাইতেন না; দ্বিতীয়ত, রামানুজান এর কাজ গণিতের চিরাচরিত গঠন অনুযায়ী ছিল না। এজন্য হার্ডি সিদ্ধান্ত নেন যে রামানুজানকে কোন স্থায়ী চাকরী পেতে হলে তাঁকে সর্বপ্রথম লন্ডন এর রয়্যাল সোসাইটির সদস্য হতে হবে। কিন্তু এত কম বয়সে কোন ভারতীয়কে সাধারণত সদস্যপদ দেওয়া হত না।

এমন সময় রামানুজান partition theory নিয়ে কাজ শুরু করেন যা তখনকার সময়ে একটি অসম্ভব সমস্যা বলে ধারণা করা হত। হার্ডির সাথে মিলে তিনি partition theory সম্পর্কে অনেক যুগান্তকারী তথ্য উদ্ভাবন করেন যা তখনকার বড় বড় গণিতবিদদের স্বীকৃতি এবং প্রশংসা পায়। partition theory তে কাজের তাঁকে ব্রিটিশ রয়্যাল সোসাইটির সদস্য হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং তিনি ট্রিনিটি কলেজের সদস্যপদ লাভ করেন।

কিন্তু এত কাজের মাঝে রামানুজান নিজের খেয়াল রাখার কথা ভুলে যান ফলে তিনি যক্ষ্মাই আক্রান্ত হন। আক্রান্ত অবস্থাই তাঁর পরিবারের কথা অনেক মনে পরে এবং সুস্থ হলে তিনি দেশে ফিরে যেতে যান। সুস্থ হওয়ার পরে দেশে ফিরে যাওয়ার দিন হার্ডি তাঁকে বিদায় জানানোর দেরিতে পৌঁছালে বলেন যে তাঁর ট্যাক্সি নাম্বার বোরিং হওয়াই তাঁর দেরি হয়েছে। রামানুজান তখন তাঁর ট্যক্সি নাম্বার জিজ্ঞাসা করলে হার্ডি বলেন নাম্বারটি 1729। রামানুজান বলেন যে নাম্বারটি অনেক চমৎকার একটা নাম্বার কারণ এটাই ক্ষুদ্রতম সংখ্যা যাকে দুইটি ঘনের সমষ্টি রূপে লেখা যায়। 1729 = 12^3 + 1^3 = 10^3 + 9^3 ।

ভারতে সফর শেষে ব্রিটেনে ফেরার কথা থাকলেও ব্রিটেনে আর ফেরা হয় না তাঁর। ২৬শে এপ্রিল, ১৯২০ সালে নিজ দেশে অজানা রোগে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। রামানুজান এর মৃত্যু উপলখ্যে দেওয়া লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির বক্তৃতাই হার্ডি বলেন তিনি যদি বিশ্বের সকল গণিতবিদকে তাদের দক্ষতা অনুযায়ী নম্বর দিতেন তবে হার্ডি নিজেকে দিতেন 20/100 এবং রামানুজানকে দিতেন 100/100।



If you like this article, please share it with your friends and follow our community on social platforms to get notified about our latest activities, events, and articles. This will mean a lot ❤


An article by The AS8 Organization

Credits:


Follow us on social platforms: